বিদ্যাসাগর || দেবাশিষ সরখেল
শ্রীমন্ত উকিলের মাথায় ভূত চাপলো। আইনব্যবসা আপাতত স্থগিত। তার মক্কেল দেবাশিষ সরখেল তো একপায়ে খাড়া। ঘটা করে, শ্রীমন্ত সাগর মহাশয় বিদ্যাসাগরের দুশো বছর পালন করতে চান।
সেমিনার করবেন, স্মরনিকা প্রকাশ করবেন, বাচ্চাদের বসে আঁকো, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কোর্টে যাওয়া বন্ধ করলেন শ্রীমন্ত উকিল। বাড়িতে দেবাশিষ চন্দ্র ছাড়া অন্য মক্কেল এলে বিরক্ত হন। এই কটা দিন আইনি পরামর্শদানে বিরতি টানেন শ্রীমন্ত উকিল।
তহবিল সংগ্রহ চলতে লাগলো পুরোদমে। কিছু লোক ইতিমধ্যে হুজুগে বৈরাগী হয়েছেন। দলে পাঁচ সাত জন।
জুলাই মাসের প্যাচপ্যাচে গরম। কেউ কেউ দশ-বিশ টাকা দিলেও, অনেকেই মোটা-সরু কথা শুনিয়ে দিচ্ছেন।
মক্কেল দেবাশিসের আর ধৈর্য্য নেই।
বলে, আপনার তো প্রচার প্রসার আছে। এত করে শ’পাঁচেক এর চেয়ে কদিন টাকা তুলে নিতে পারতেন কোর্টে বসেই।
শ্রীমন্ত সাগর হাসেন। – না, তাহলে উদ্দেশ্যসিদ্ধ হোত না। মানুষকে যুক্ত করতে হবে। মানুষের ভেতর ঈশ্বরচন্দ্রের কথা নিয়ে যেতে হবে। আমরা মানুষকে বোঝাতে পারিনি।
শেষ মেষ এক লোহার দোকানে। হার্ডওয়্যার শপ।
মালিক যেন শ্রীমন্ত সাগর নয়, বিদ্যাসাগরকে প্রত্যক্ষ করছেন, সাষ্টাঙ্গে প্রনাম।
অন্যদের দিকে তাকিয়ে বল্লেন, আমার বিজনেস তো লাটে উঠে গেছল। ঘরশত্রু বিভীষণ, ভাইটা ডুবিয়েছিল। ভাগ্যিস উকিল সাহেব পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি ক্যান্সেল করিয়ে দিয়েছেন। বেঁচেছি।
সবার চোখের সামনে ক্যাশবাকসো খুলে দিলেন। প্রায় লাখ দেড়েক। বল্লেন, নিয়ে যান স্যার।
শ্রীমন্ত সাগর জীব কাটেন। – এ্যাতো লাগবে না।
-কোনোদিন তো ভালো কিছু করিনি। যদি ভালো কাজে লেগে যাই। বিদ্যাসাগর আমি বুঝি না স্যার, আমি শ্রীমন্ত সাগর বুঝি। একটা দিন উনাকে খুশী করে আমায় ধন্য হওয়ার সুযোগ দিন।
আমরা এ ওর মুখের দিকে চাইতে লাগলাম।
শ্রীমন্ত সাগর যথারীতি নরম্যাল মুডে। টাকাগুলি নিয়ে রসিদ কেটে দিলেন।
🌾🌾🌾🍄 শি ল্প জ গ ৎ 🍄🌾🌾🌾
লেখা পাঠানোর ই-মেল – shilpajagatbangla@gmail.com
আমাদের ফেসবুক পেজ
Discussion about this post